ইফতেখার আলম বিশাল: পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীতে বসানো হয়েছে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট। কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার প্রায় দুই বছর পর পরিক্ষামূলক ভাবে একটি ইঞ্জিনসহ মোট ৬টি বগি ওয়াস করা হয়েছে।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে রেলওয়ে ওয়াশফিডে অবস্থিত এ প্লান্টে ট্রেনের কোচ ওয়াস করা হয়। ৫ মিনিটের মধ্যেই সমপূর্ণ বগি ওয়াস হয়ে বের হয়ে আসছে এ অটোমেটিক ওয়াশিং প্লান্ট থেকে।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও এখন থেকে অটোমেটিক (স্বয়ংক্রিয়) পদ্ধতিতে ট্রেন ওয়াশ করা যাবে।
রেলওয়ে জানায়, ট্রেন চলাচল সময়সূচি বজায় রাখার সুবিধার্থে সময় বাঁচানোর লক্ষ্যে ২০১৭ সালে দেশে প্রথম অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (সিএমই) মো. কুদরতে খোদা জানান, এ প্লান্টে ধোলাই কর্মীর প্রয়োজন হয়না। তবে ট্রেনের ভেতরে পরিছন্নকর্মী দ্বারা পরিস্কার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ প্লান্টে পানিও অপচয় হয়না বল্লেই চলে। কারন হিসেবে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ পানি রিসাইকেলিং করা হয়। এতে ৭০% পানি সাশ্রয় হবে বলেও জানান তিনি।
কুদরতে খোদা বলেন, আটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্টে রয়েছে ডিটারজেন্ট বা সাবান পানি, এছাড়াও রয়েছে গরম পানির ব্যবস্থা, ৭টি অটো ব্রাশ, ৯টি উচ্চ গতির ফ্যান। গরম এবং ঠান্ডা বাতাসের সাহায্যে ধোলাই কোচগুলি শুকিয়ে ফেলা হয়।
তিনি আরো বলেন, ৫ মিনিটের মধ্যে অতিরিক্ত বগিসম্পন্ন ট্রেন পরিস্কার হয়ে বের হয়ে আসতে পারে অটোমেটিক ওয়াশিং প্লান্ট থেকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকল্পের সহকারী পরিচালক তসলিম উদ্দিন জানান, পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এ দুটি ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। করোনার কারনে এ প্লান্ট দুটি চালু করা সম্ভব হয়নি। এ প্রকল্প একটি আমেরিকান কম্পানি হাতে নিয়েছিলো। করোনার কারনে সে কম্পানির প্রকৌশলীরা বাংলাদেশে আসতে পারেননি। আশা করা যায় আমরা অতি শিগ্রহী অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্টে কোচগুলি ওয়াস করতে পারবো। সে প্রক্রিয়ায় আমরা আগাচ্ছি। তিনি আরো বলেন এক ঘন্টায় আমরা তিনটি যাত্রীবাহি ট্রেন ওয়াস করতে পারবো এ প্লান্টে।
রেলওয়ে সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি রেলস্টেশনে ওয়াশফিডে প্রতিদিন ট্রেনের ট্রিপ শেষে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নিয়মিত ট্রেন পরিষ্কারের কাজ করা হয়।
বর্তমানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে প্রতিটি ট্রেন পরিষ্কারে কমপক্ষে দেড় ঘণ্টা বা অতিরিক্ত বগিসম্পন্ন ট্রেনের ক্ষেত্রে ২ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। এতে সময় ছাড়াও অতিরিক্ত জনবল ও ব্যয়ের প্রয়োজন পড়ে।
অনেক সময় জনবলের স্বল্পতার কারণে সময় বেশি লাগে এবং এতে ট্র্রেন চলাচলের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে।
কিন্তু অটোমেটিক পদ্ধতিতে একটি ট্রেন পরিষ্কার করতে বড় জোর পাঁচ মিনিট সময় লাগবে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.